বীরগঞ্জে ট্রাক ও মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৪

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে একটি ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এতে মাইক্রোবাসটির চালক এবং ঠাকুরগাঁও ডিস্ট্রিক্ট অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসের ৪ কর্মকর্তা প্রাণ হারিয়েছেন।
সোমবার (১৯ মে) ভোর আনুমানিক সাড়ে ৬ টার দিকে বীরগঞ্জের ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কের ২৬ মাইল বাবলু ফার্ম এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে ২ জনের মৃত্যু হয় এবং উদ্ধার করে হাসপাতাল নেওয়ার পথে ১জন ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত ৩জন ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহতরা হলেন, ঠাকুরগাঁও অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসের অডিটর জুলফিকার আলী (৪৬), সহকারী অডিটর ও ইমরুল হোসেন (৪৫), দেলোয়ার হোসেন (৫০) এবং গাড়িচালক আরিফুল ইসলাম মানিক(৩২)।
আহতরা হলেন, ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের গোবিন্দ নগর মুন্সিহাট এলাকার মিজানুর রহমান সরকার(৫০), আল মামুন(৪০) ও দিনাজপুর জেলার বিরামপুর ধানঘড়া এলাকার মোহাম্মদ ইদ্রিস আলীর ছেলে নাহিদ হোসেন (৩২)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বাবলু ফার্ম এলাকায় একটি নোয়া মাইক্রোবাস পৌঁছালে বিপরীত থেকে ছুটে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা স্থানীয়রা কয়েক জন তাদের উদ্ধার করে হাসপালে ভর্তি করি। মাইক্রোবাসটি দ্রæতগতিতে আসছিল এবং বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকের সঙ্গে সোজাসুজি সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনার ফলে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাটি এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দুর্ঘটনাকবলিত যান দুটি পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল গফুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,র্ ান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। এব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস নিহত ও আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ জানায়, ঠাকুরগাঁও থেকে ৭ জন নোয়া মাইক্রোবাসে ট্রেনিংয়ের জন্য ঠাকুরগাঁও ডিস্ট্রিক্ট অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসে কর্মরত ৭ জন রংপুর যাচ্ছিলেন। দিনাজপুরের বীরগঞ্জের ২৬ মাইলের বাবলুর ফার্মের সামনে ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে চারজনের প্রাণহানি ঘটে। আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে, তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
দশমাইল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক জানান, সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে রংপুরগামী একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা মালবোঝাই ট্রাকের সংঘর্ষ হলে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এতে মানিক ও দেলোয়ার ঘটনাস্থলেই মারা যান। স্থানীয়রা আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা ইমরুল ও জুলফিকারকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাইওয়ে পুলিশ রংপুর রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, একটি মাইক্রোবাস ও মালবাহী সিমেন্ট বোঝাই ১০ চাকার ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষ ভোর আনুমানিক ৬ টা থেকে সাড়ে ৬ টার সময় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। সকালে প্রচন্ড বৃষ্টি ছিল, হয়তোবা মাইক্রোবাসটি ঊর্ধ্ব গতিতে চলছিল। এ মহাসড়কের রাস্তাটি অত্যন্ত ন্যরো, আমরা এ সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে হাইওয়ে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এ বিষয়ে দুর্ঘটনা আইনে একটি মামলা হবে। আমরা তদন্ত করে দেখব আসলে এটি কি কারনে ঘটনাটি ঘটেছে। কারাদোষী সেই অনুযায়ী পুলিশে রিপোর্ট করব। রাস্তাটি অত্যন্ত ন্যারো তাই রোডসেন হাইওয়ে পুলিশের সাথে কথা বলব। রোড সেন হাইওয়ে পুলিশ রাস্তাটি যেন সংস্কার করে এ ব্যাপারে আমরা চিঠি করব।
আপনার মতামত লিখুন